ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে ৪জন কে মৃ-ত্যু’দণ্ড এবং ১জনকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত
২৪ দিন আগে শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
কুমিল্লার বরুড়ায় জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ফার্নিচার ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে ৪জন কে মৃত্যুদণ্ড এবং ১জন কে যাবজ্জীবন মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ দুপুরে
এ রায় দেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের বিচারক রোজিনা খান ।এদিকে ছেলে মো. আবু নাসের বাবার হত্যাকারীদের বিচারের উদ্দেশে আইনজীবী হয়েছেন । ২৫ বছর পর তিনি বিচার পেলেন। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে খুন করা হয় ওই আইনজীবীর বাবাকে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুমিল্লা বরুড়া উপজেলার পরানপুর গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে ইউছুফ, বনি আমীন, ইউছুফের ভাতিজা সোলায়মান, ইউছুফের শ্যালক আবদুল হক এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইউসুফের বড় বোন রজ্জবী বিবি।
মামলার বিবরণে থেকে জানা যায়- জায়গা সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ১৯৯৮ সালের একুশে মে দিনের বেলায় আসামিদের সঙ্গে ওই আইনজীবীর বাবা ফার্নিচার ব্যবসায়ী মো. শহীদ উল্লাহ'র কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জের ধরে ঐদিন দিবাগত-রাত সাড়ে ৮টার দিকে আসামিরা আইনজীবীর বাবাকে পরানপুর বাজারের পশ্চিম পাশে ডেকে নিয়ে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুমিল্লায় হসপিটালে নেওয়ার পথে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে নিহতের ছোটভাই ও বরুড়া বিজরা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মো. আমান উল্লা বাদী হয়ে ১৯৯৮ সালের ২২ মে একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে মোঃ ইউসুফসহ ১৫ জনকে আসামি করে বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ আসামি মো. ইউসুফসহ ১৫জনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ১৯৯৯ সালের ৮ এপ্রিল একটি এবং ২০০৪ সালের ৩০ অক্টোবর আরেকটি সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন।
রাষ্টপক্ষের কৌশলী আইনজীবী এপিপি মো. নুরুল ইসলাম এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আশা করছি হাইকোর্ট এ রায় বহাল রেখে দ্রুত রায় বাস্তবায়ন করবেন।
আসামিপক্ষের এডভোকেট আ. মমিন ফেরদৌস বলেন, এ রায়ের কপি হাতে পেলে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবে। এছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষে নিযুক্ত কৌশলীর পাশাপাশি মামলার ব্যক্তিগত আইনজীবী ছিলেন- কুমিল্লা বারের সিনিয়র অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ সালাউদ্দিন ও নিহতের ছেলে অ্যাডভোকেট মো. আবু নাসের।
মামলায় ১৫ জন আসামির মধ্যে রায় ঘোষণাকালে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত চারজন ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাকিরা মামলার দায় হইতে অব্যাহতি পায়। এর মধ্যে ৩ জন আসামি মামলা চলাকালীন সময়ে মৃত্যু হয়।
নিহতের ছেলে আইনজীবী মো. আবু নাসের বলেন- আমার পিতাকে যখন হত্যা করা হয়, তখন আমি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি। আমি আমার মায়ের অনুপ্রেরণায় পিতার খুনিদের বিচার নিশ্চিত করতে আইনজীবী হয়েছি। ২৫ বছর পর হলেও একজন সন্তান হিসেবে আমি আমার পিতা হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে পেরেছি, এটা আমার অনেক বড় পাওয়া।