সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছেন ছকিনা খাতুন
২১ দিন আগে শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
সূর্যমুখীর হাসিতে হাসছেন ছকিনা খাতুন। সূর্যমুখী ফসলের ক্ষেত দেখতে
বা ছবি উঠাতে যুবক শ্রেণির ছেলে মেয়েরা ভীড় জমায়। এছাড়া টিক টক করার জন্য অনেকে চলে
আসেন এই সূর্যমুখীর বাগানে।
দৃশ্যমান সৌন্দর্য বর্ধনকৃত সূর্যমুখীর বাগানটির অবস্থান হল সুন্দরবন
সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ইউপির কচুখালী গ্রামে। বাগানের মালিক
ছকিনা খাতুন বলেন বিকেল হলে বিভিন্ন মানুষ বাগানটি রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় দেখতে আসেন
এবং একই সাথে ছবি তোলা বা কেউ কেউ টিক টকও করে থাকেন।
ছকিনা খাতুন বলেন নারী নেতৃত্বধীন সিএসওদের অংশ গ্রহণ মূলক জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিযোজন
প্রকল্পের আওতায় মরমী মহিলা সংগঠনের বাস্তবায়নে এবং ক্রিশ্চিয়ান এইডের অর্থায়নে সূর্যমুখী
ফুলের বাগানটি করেছেন। এনজিএফের টেকনিক্যাল সাপোর্টে ৭ কাঠা জায়গায় সূর্যমুখী ফুলের বাগানটি অবস্থিত।
এর জীবনকাল ৯০ থেকে ১১০দিন। সরজমিনে দেখা যায়
সহস্রাধিক সূর্যমুখী গাছ ফুল সহ সূর্যের দিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। দেখতে এক
অপরুপ সৌন্দর্য মন্ডিত বাগান।
কৃষক ছকিনা খাতুন বলেন তিনি ফুল গুলি শুকনা হলে বা গাছের বয়স বেড়ে
গেলে মৃত প্রায় হলে তখন বীজ সংগ্রহ করবেন এবং এই বীজ থেকে তৈল বের করবেন। এই বাগানটি
পরিচর্যা করতে সামান্য কিছু সার ও বীজ ব্যবহার করেছেন। তিনি তার স্বামী ও এক পুত্র
বাগানে পরিশ্রম করেছেন। তিনি বলেন সূর্যমুখীর বীজের তেলের দাম বেশী। এই বীজের তেলের
প্রচুর উপকারিতা রয়েছে।
মরমী মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী প্রতিমা রানী মিস্ত্রী বলেন, তার
সংগঠন থেকে বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। তাকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করার
জন্য। ফুলটি চাষ করার পর বাগানের সৌন্দর্য এলাকার মানুষের পদচারণা সবমিলিয়ে তার মুখে
হাসি ফুটে উঠেছে। এই বাগানকে ঘিরে তিনি নানান স্বপ্ন দেখছেন। এছাড়া এর পাশাপাশি তিনি
বাড়ীর অন্যান্য সবজি চাষ, হাঁস পালন করেছেন। কৃষক ছকিনা খাতুন বলেন উপজেলা কৃষি অফিসের
উপসহকারী কৃষি অফিসার তার প্রদর্শনী প্লটটি পরিদর্শন করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন
প্রকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
সূর্যমুখী বীজ ও বীজ থেকে প্রস্ততকৃত তেলের অনেক গুণাবলী রয়েছে
বলে জানা যায়। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে প্রকাশ শ্যামনগর উপজেলায় প্রায় ১২ হেক্টর জমিতে
সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী ফুলের বীজ ও বীজের তেল পুষ্টি গুনে ভরা।
জানা যায়, একটি সূর্যমুখী গাছ প্রায় ৯ থেকে ১০ ফুট লম্বা হয়ে থাকে।
এবং ফুলের ব্যাস প্রায় ১২ ইঞ্চি। এই ফুল সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকে তাই সূর্যমুখী নামকরণ
করা হয়েছে বলে কৃষি বিশেজ্ঞরা জানান। সূর্যমুখীর বীজ মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে
বাড়িয়ে দেয়। বীজ থেকে প্রস্ততকৃত তেলে রয়েছে ভিটামিন-ই। যা সূর্যের আল্ট্রা-ভায়োলেট
সূর্যরশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করে। এই তেল দেহের চামড়ায় জ¦ালা পোড়া, হাঁপানি রোগ সহ
অন্যান্য রোগেরও উপকার করে।
কৃষক ছকিনা খাতুন জানান তার বাগান দেখে এলাকার অনেক কৃষক সূর্যমুখী
ফুল চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আমাদের দেশের অতি পরিচিত একটি তেল সূর্যমুখী তেল। এই তেলের দাম
অন্যান্য তেলের দামের তুলনায় একটু বেশী। তাছাড়া এটি সৌন্দর্যবর্ধনকৃত বাগান। এটি বাংলাদেশ
সহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে ব্যাণিজিকভাবে চাষ হয়ে থাকে।