বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ২০ লাখ মানুষ ,ঝড়ে বিপর্যস্ত রাশিয়া-ইউক্রেন
১২ দিন আগে সোমবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৪
ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল বাতাস এবং ব্যাপক বন্যায় বিপর্যস্ত রাশিয়া ও ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চল। মস্কোর সংযুক্ত করা ইউক্রেনীয় অঞ্চলও এর মধ্যে রয়েছে। এতে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন উভয় দেশের ২০ লাখ মানুষ। এ ছাড়া ঝড়ের তাণ্ডবে এ পর্যন্ত কমপক্ষে চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনের পাশাপাশি ঝড়টি মলদোভা, জর্জিয়া এবং বুলগেরিয়াতেও আঘাত হেনেছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমে বরাতে সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ইউক্রেন বলেছে, তুষারঝড়ের পর দেশের ২ হাজার ১৯ টি গ্রাম ও শহরে বিদ্যুৎ নেই।
রাশিয়ার জ্বালানি মন্ত্রণালয় বলছে, দাগেস্তান, ক্রাসনোদার ও রোস্তভের পাশাপাশি ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন, জাপোরিঝিয়া এবং ক্রিমিয়া সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়ার কৃষ্ণসাগরীয় বন্দর সোচিতে বড় বড় ঢেউ শহরের সমুদ্র উপকূলে আঘাত হানতে দেখা গেছে। এছাড়া সেখানকার একটি তিনতলা ভবন ধসে পড়তে দেখা গেছে একটি ভিডিও ফুটেজে।
অন্যদিকে রাশিয়ার কৃষ্ণসাগর উপকূলে আনাপা শহরের কাছে ২১ জন ক্রুসহ একটি পণ্যবাহী জাহাজ তলিয়ে গেছে। রাজধানী মস্কোতে ভারী তুষারপাতের পরে কর্তৃপক্ষকে রাস্তা পরিষ্কার করতে বিশেষজ্ঞ যন্ত্রপাতি নামাতে হয়েছিল।
ক্রিমিয়া উপদ্বীপে মস্কো-নিযুক্ত কর্মকর্তারা উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যার কথা জানিয়েছেন। উপদ্বীপটির বিভিন্ন শহরের রাস্তায় গাছ ও অন্যান্য ধ্বংসাবশেষ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপল বন্দরে সামুদ্রিক বন্যায় সেখানকার একটি ঐতিহাসিক জাদুঘর-অ্যাকোয়ারিয়াম ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর প্রায় ৮০০ বিদেশি মাছ মারা গেছে বলে জাদুঘরের পরিচালক জানিয়েছেন। এছাড়া ক্রিমিয়ার বেশ কয়েকটি পৌরসভায় এখন জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আন্তন হেরাশচেঙ্কো বলেছেন, ঝড়ে ‘অধিকৃত ক্রিমিয়ার সৈকতে রুশ সেনাবাহিনীর তৈরি করা পরিখা ভেসে গেছে’। তবে রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনের এই দাবির বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি।
এদিকে ইউক্রেনের ডিএসএনএস জরুরি পরিষেবা বলেছে, তুষারঝড় এবং প্রচণ্ড বাতাস দেশের ১৬টি অঞ্চলে আঘাত হেনেছে। সংস্থাটি বলেছে, দক্ষিণ-পশ্চিমে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ওডেসা অঞ্চলে আটকে পড়া যানবাহন থেকে শিশুসহ ৪৮ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিছু জায়গায় তুষারপাত দুই মিটারের বেশি হওয়ার কারণে ৮৪০টির মতো যানবাহনকে সরিয়ে নিতে হয়েছিল বলেও জরুরি পরিষেবা জানিয়েছে। অন্তত ১ হাজার ৩৭০টি পণ্যবাহী লরি বর্তমানে আটকে আছে।
ডিএসএনএস আরও জানিয়েছে, উদ্ধার অভিযান চালাতে ইউক্রেনজুড়ে দেড় হাজারেরও বেশি উদ্ধারকারীকে মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ, সীমান্তরক্ষী এবং ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরাও তাদের সাহায্য করছেন।
এদিকে প্রচণ্ড বাতাসে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে অবস্থিত দেশটির বৃহত্তম পতাকা (১৬*২৪ মিটার) ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে খুঁটি থেকে নামতে হয়েছিল। শহরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পতাকাটি প্রতিস্থাপন করে আবারও তোলা হবে।
প্রসঙ্গত, ঝড়টি এমন এক সময় আঘাত হানলো যখন রাশিয়া আবার ইউক্রেনের পাওয়ার গ্রিড এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে ব্যাপক রকেট এবং ড্রোন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।