বৃষ্টিপাতের ফলে আকস্মিক বন্যায় মৃত্যু ৩৭ জনের
২ ঘন্টা আগে সোমবার, ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫
মরক্কোর উপকূলীয় শহর সাফিতে হঠাৎ সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৩৭ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। রবিবার ভারী বর্ষণের ফলে এই বিপর্যয় সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, রাজধানী রাবাত থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত সাফি শহরের প্রধান সড়কগুলো কাদাপানিতে ডুবে গেছে। অনেক এলাকায় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, শহরের ঐতিহাসিক পুরোনো অংশে অন্তত ৭০টি বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। আটলান্টিক উপকূলবর্তী এই বন্দর শহরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী একাধিক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিভিন্ন রুটে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসনের ভাষ্য অনুযায়ী, মাত্র এক ঘণ্টার প্রবল বর্ষণই সাফি শহরের স্বাভাবিক চিত্র বদলে দিয়েছে। হঠাৎ পানি ঢুকে পড়ায় অনেক মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বাধ্য হন।
এদিকে, মরক্কোর আবহাওয়া অফিস মঙ্গলবার দেশজুড়ে আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, টানা সাত বছর ধরে মারাত্মক খরার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে মরক্কো। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিনের শুষ্কতার কারণে মাটি পানি শোষণ করতে না পারায় অল্প সময়ের ভারী বৃষ্টিই দ্রুত বন্যায় রূপ নিচ্ছে।
পরিবেশবিদরা একে জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি প্রভাব হিসেবে দেখছেন। শুষ্ক ও শক্ত মাটির কারণে হঠাৎ বৃষ্টিপাত ভয়াবহ বন্যার জন্ম দিচ্ছে, যা পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার স্পষ্ট ইঙ্গিত।
মরক্কোর আবহাওয়া অধিদফতরের জেনারেল ডিরেক্টরেট (ডিজিএম) জানিয়েছে, ২০২৪ সাল দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর হিসেবে রেকর্ড হয়েছে। ওই বছর গড় বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের তুলনায় ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ কম ছিল।
সাধারণত শরৎকালে মরক্কোয় তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এখন সেখানে অনিয়মিত বৃষ্টিপাত, অস্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও চরম আবহাওয়ার ঘটনা বাড়ছে, যা দেশটির জন্য নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে।