শিক্ষকের মিথ্যা অপবাদে যুবকের আত্মহত্যা

Bortoman Protidin

১১ ঘন্টা আগে সোমবার, নভেম্বর ৩, ২০২৫


#

নাটোরের সিংড়ায় শিক্ষকের দেওয়া মিথ্যা চুরির অপবাদ সহ্য করতে না পেরে আশিক হোসেন (৩০) নামের এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার (১ নভেম্বর) বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহতের মা রানী বেগম রাতে সিংড়া থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আগমুরশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিনকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।

নিহত আশিক হোসেন উপজেলার আগমুরশন গ্রামের সেলিম হোসেনের ছেলে। তিনি আগমুরশন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী কাম-দপ্তরি হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

মামলার এজাহার ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রুহুল আমিন তার সুদের কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য মেয়ের কানের দুল বিদ্যালয়ে এনে শ্রেণিকক্ষে নিজের ড্রয়ারে রাখেন। পরে বিদ্যালয় ছুটি শেষে বাড়ি ফিরে গিয়ে বুঝতে পারেন দুলটি তিনি ফেলে এসেছেন। পুনরায় বিদ্যালয়ে গিয়ে দুল খুঁজে না পেয়ে বিষয়টি অন্য শিক্ষকদের জানান।

পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে ডেকে নিয়ে নৈশপ্রহরী আশিকের ওপর চুরির অভিযোগ তোলা হয়। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে শনিবার আশিক কলিয়া বাজারে গিয়ে লোকজনের মুখে চুরির কথা শুনে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। পরে সেখানেই তিনি বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।

স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকেল ৪টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক রুহুল আমিন বলেন, “আমি মেয়ের দুল ড্রয়ারে রেখে ভুলে গিয়েছিলাম। পরে গিয়ে পাইনি, তাই শিক্ষকদের জানিয়েছিলাম। আশিককে শোকজ করা হয়েছিল আগে থেকেই।”

অন্যদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, “এক শিক্ষকের কিছু স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে আশিককে বাসায় ডেকে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, কোনো অপবাদ দেওয়া হয়নি।”

সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মমিনুজ্জামান বলেন, “আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন  
Link copied