টাঙ্গাইলে রহমতের বৃষ্টি কামনায় ইসতিসকার নামাজ আদায়
২৭ দিন আগে শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
সারা দেশে বইছে তীব্র তাবদাহ। প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে দেশ। অতি খরা ও অতিরিক্ত তাপমাত্রায় নদী-খাল-জলাশয় শুকিয়ে গেছে। মাঠের ফসল, গাছপালা, উদ্ভিদ ও তৃণলতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও জীবজন্তু ও পশুপাখির কষ্টের কোনও সীমা নাই। এই অবস্থায় নাভিশ্বাস মানুষের। এরপরও নেই বৃষ্টির দেখা। এই অবস্থায় এমন বিপর্যয় থেকে রেহাই পেতে একমাত্র আল্লাহতায়ালাই ভরসা। তাই টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টি কামনায় দুই রাকাত ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১১টায় উপজেলার গোবিন্দাসী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ইউনিয়ন ইমাম ও মুয়াজ্জিন পরিষদের উদ্যোগে এই নামাজের আয়োজন করা হয়। নামাজ শেষে সবাই মহান আল্লাহ পাকের কাছে মাফ চেয়ে গরম থেকে মুক্তি, ফসল রক্ষা ও বৃষ্টির জন্য রহমত কামনা করে দোয়া করেন। এসময় অসংখ্য মুসল্লি অংশ নেন এবং বৃষ্টির জন্য মহা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
নামাজে অংশ নেয়া মুসুল্লিরা জানান, প্রচণ্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। প্রচন্ড তাপদাহের কারণে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ চরম বিপাকে পড়েছেন শিশুসহ নানা বয়সের মানুষ ঠান্ডা জ্বর ও ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তীব্র গরম থেকে মুক্তি পেতে আল্লাহর দরবারে বৃষ্টি প্রার্থনায় এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ নামাজের আয়োজন করা হয়।
নামাজে অংশ নেয়া মোঃ লিটন মন্ডল বলেন, প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ ও মোনাজাতের আয়োজন করেন এলাকাবাসী। তীব্র গরমের কারণে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। জমির আধাপাকা ধানসহ বিভিন্ন ফসল নষ্ট হচ্ছে। এ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে মোনাজাত করছি।
মুসল্লি জাহিদুল ইসলাম জানান, টানা কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রখর রোদের কারণে জীবিকা নির্বাহের জন্য বাইরে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষ। এ কারণে বৃষ্টি চেয়ে আল্লাহর দরবারে দুই রাকাত নামাজ আদায় ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
বৃদ্ধ মুসল্লি আলহাজ্ব খন্দকার আব্দুল করিম বলেন- দীর্ঘদিন ধরে অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি ও গাছপালা সহ সবাই খুব কষ্টে আছেন। তাই আমরা বৃষ্টির আশায় নামাজ আদায় করতে আসছি। আল্লাহ তাআলা চাইলে সবকিছুই সম্ভব। তাই তীব্র তাপদাহ থেকে বাঁচতে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করে নামাজ আদায় ও দোয়া প্রার্থনা করেছি।
নামাজ ও মোনাজাতের পর গোবিন্দাসী বাজার জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব আলহাজ্ব শহিদুল ইসলাম বলেন, ইসতিসকার নামাজের অর্থ হল, দুনিয়ায় যদি কোন বালা-মুসিবত আসে, প্রচণ্ড দাবদাহ, খরার কারণে ফসলাদি নষ্ট হয়ে যায়, মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করে, তখন মাঠে গিয়ে খোলা আকাশের নিচে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়তে হয়। আমরা সকলে আল্লাহর কাছে কৃতকর্মের মার্জনার জন্য মোনাজাত করেছি। আল্লাহ যেন রহমতের বৃষ্টি দিয়ে আমাদেরকে শান্তি এবং সবুজ জমিন যেন ফিরি়য়ে দেন। সব বালা মুসিবত থেকে যেন আমাদেরকে হেফাজত করেন।
এসময় ইসতিসকার নামাযে ইমামতি করেন- সিরাজগঞ্জ বনপাড়া মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস আলহাজ্ব হজরত মাওলানা মুফতি মইনুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ হাহাকার করছে। মহান আল্লাহ কোনও কারণে আমাদের উপরে নারাজ হয়েছেন। এ কারণে বৃষ্টিবর্ষণ বন্ধ রেখেছেন। আজকে মহান আল্লাহর কাছে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের নিয়ে নামাজ আদায় করেছি। নামাজ শেষে তীব্র গরম থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর রহমত কামনা করে মোনাজাত করেছি। মহান আল্লাহ আমাদের নামাজ কবুল করে রহমতের বৃষ্টি দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা আমাদের সকলের।