ধান শুকাতে দুই সেতু দখল, সিরাজগঞ্জে বন্ধ পথচারীর চলাচল

Bortoman Protidin

১ ঘন্টা আগে মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৮, ২০২৫


#

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা গ্রামের ছোট্ট খালের ওপর পাশাপাশি ৩২ ও ৪৪ মিটার দীর্ঘ দুটি সেতু নির্মাণ হয়েছিল প্রায় আড়াই বছর আগে। নির্মাণে খরচ হয়েছিল প্রায় ৬ কোটি টাকা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, সংযোগ রাস্তা না থাকায় আজও সেতু দুটির ওপর দিয়ে একটি যানবাহনও চলাচল করে না। অব্যবহৃত ওই সেতু এখন স্থানীয়দের জন্য গোবরের ঘুঁটে, ধান ও খড় শুকানোর জায়গায় পরিণত হয়েছে।

এই দুটি সেতুকে ঘিরে থাকা কুড়ালিয়া দিয়ার–একডালা সড়কটি প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ। রাস্তাটি দিয়ে রতনকান্দি ও কাজিপুর উপজেলার শুভগাছা ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নিয়মিত চলাচল করেন। কিন্তু তিন বছর আগে রাস্তাটির একটি বড় অংশ ভেঙে খালে তলিয়ে যাওয়ার পর থেকে চলাচল কার্যত বন্ধ। ভাঙা অংশের পুনর্নির্মাণ না হওয়ায় এলাকা দুটি যাতায়াত সংকটে পড়েছে।

২০২৩ সালে এলজিইডি সেতু দুটি নির্মাণ করলেও ভেঙে যাওয়া রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় পুরো প্রকল্পই অকার্যকর হয়ে আছে। ফলে রোগী পরিবহন, কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া, এমনকি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত স্কুল–কলেজে যাতায়াত—সবকিছুতেই চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহরাব আলী, বেবি খাতুন, আমিনুল ইসলাম ও জহুরা খাতুন জানালেন, ২৫ বছর আগে বন্যায় রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ার পর আর কখনো তা ঠিক হয়নি। কর্মকর্তারা কয়েকবার এলেও কোনো উন্নয়ন হয়নি। সেতু হয়েছে, কিন্তু রাস্তা না থাকায় এখনো গাড়িতে চড়ার সুযোগ মেলেনি। অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিতে গেলেও বিপাকে পড়তে হয়।

কৃষক হাবিবুর রহমানসহ অন্যরা বলেন, রাস্তা না থাকায় সার–বীজ আনতে কষ্ট হয়, আবার নিজেদের উৎপাদিত ফসল হাটে নিতে গেলেও পথে ঘুরপথে যেতে হয়। এতে সময় ও খরচ দুটোই বেড়ে যায়, ন্যায্য দামও পাওয়া যায় না।

এলাকার কয়েকজন কলেজছাত্র শিহাব বাবু ও সাগর আলী বলেন, খারাপ রাস্তার কারণে সময়মতো ক্লাসে পৌঁছানোই বড় চ্যালেঞ্জ। বর্ষায় পরিস্থিতি আরও করুণ হয়ে যায়—তখন যাতায়াত প্রায় অসম্ভব।

শতবর্ষী হযরত আলী জানান, কুড়ালিয়া, চিলগাছা, একডালা, কুড়িপাড়া, মহিষামুরাসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই রাস্তাই ব্যবহার করতেন। এখন হাটে যেতে হলেও দীর্ঘ পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে।

কৃষক মো. ভুট্ট আলী বলেন, যানবাহন চলাচল না করায় সেতুর ওপর ধান, খড় ও ঘুঁটে শুকানো ছাড়া তাদের আর উপায় নেই।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রেজাউর রহমান জানান, কুড়ালিয়া–একডালা সড়কের ৩৭৭৬ মিটার অংশের মধ্যে প্রায় ৭০০ মিটার তিন বছর আগে ভেঙে খালে পড়ে গেছে। ওই অংশে সরকারি রাস্তা না থাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তিনি বলেন, এলাকাবাসী যদি যৌথভাবে প্রয়োজনীয় জায়গা দিতে রাজি হন, তাহলে রাস্তা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

ইউটিউব সাবস্ক্রাইব করুন  
Link copied