শামীমা ও ইভ্যালির রাসেলের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ
১৮ দিন আগে শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার এক মামলায় ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ রাসেল ও তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে তাদের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ঢাকার মহানগর হাকিম বেগম ফারহা দিবাহ ছন্দা বৃহস্পতিবার বাদীপক্ষের আবেদনের শুনানি করে এ আদেশ দেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী সাকিবুল ইসলাম আদালতপাড়ার সাংবাদিকদের বলেন, “গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছিল আদালত। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য আসামিদের বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি ও সম্পত্তি ক্রোকের আবেদন করি। আদালত তা আবেদন মঞ্জুর করেছেন।”
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরুর পর গাড়ি, মোটরসাইকেল, আসবাবপত্র, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনের মত পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির বিজ্ঞাপন দিয়ে সাড়া ফেলে অনলাইন মার্কেট প্লেস ইভ্যালি।
তাদের চটকদার অফারের ‘প্রলোভনে’ অনেকেই বিপুল অংকের টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন পরে বেশি দামে বিক্রি করে ভালো লাভ করার আশায়। কিন্তু মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও তাদের অনেকে পণ্য বুঝে পাননি; ইভ্যালি অগ্রিম হিসেবে নেওয়া টাকাও ফেরত দেয়নি।
এক পর্যায়ে ক্রেতা ও পণ্য সরবরাহকারীদের কাছে ৫৪৩ কোটি টাকার দায়ে পড়ে ইভ্যালি। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ইভ্যালিসহ আরও বেশ কিছু ই কমার্স কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভে নামে গ্রাহকরা।
সে সময় রাসেল ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে কয়েক ডজন মামলা হয়; এ মামলা তারই একটি।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ইভ্যালির গ্রাহক মুজাহিদ হাসান ফাহিম ২০২১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ৫ লাখ টাকার একটি মোটরসাইকেল অর্ডার করে তার দাম অগ্রিম পরিশোধ করেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সেই মোটরসাইকেল না পেয়ে ফাহিম ইভ্যালির ধানমন্ডি অফিসে যোগাযোগ করেন।
মোটরসাইকেল দিতে না পারায় ইভ্যালি ৫ লাখ টাকার চেক দেয় ফাহিমকে। কিন্তু ওই বছরের ২৩ অগাস্ট ইভ্যালি থেকে ফোন করে বলা হয়, ব্যাংক হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ নেই, ফাহিম যেন ওই চেক নির্ধারিত তারিখে ব্যাংকে জমা না দেন। চেকের অর্থ পরে পরিশোধ করারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় সে সময়।
ফাহিমের অভিযোগ, ওই চেক নগদায়ন করার জন্য ফাহিম ইভ্যালি, রাসেল ও শামীমা নাসরিনকে বার বার তাগাদা দিলেও তারা তাকে টাকা দিতে কালক্ষেপণ করে চেকের মেয়াদ অতিক্রম করান। এরপর ফাহিম আদালতে মামলা করেন।
এরকমই এক গ্রাহকের করা মামলায় ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও শামীমাকে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয় সে সময়।আট মাস কারাবাসের পর সবগুলো মামলায় জামিন পেয়ে ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল কারামুক্ত হন ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা। তার স্বামী রাসেল জামিনে ছাড়া পান গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর।
গ্রাহকদের করা এসব মামলার কার্যক্রম স্থগিতের জন্য হাই কোর্টে একটি আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু হাই কোর্টের একক কোম্পানি বেঞ্চের বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর গত বছরের ২০ জুন তা খারিজ করে দেন।