হাসপাতালের বিল দিতে না পেরে সন্তানকে বিক্রি করলেন মা
১৪ দিন আগে শনিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৪
বর্তমান প্রতিদিন ডেস্ক:
গর্ভবতী থাকা অবস্থায় স্বামীর সাথে মনোমালিন্য হয় কোকিলা খাতুনের। তারপর মায়ের বাড়িতে চলে যান। কোকিলা খাতুনের মা আনোয়ারা খাতুন ঝিনাইদহ শহরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কোকিলা খাতুনের প্রসব বেদনা উঠলে কালীগঞ্জ শহরের ডক্টরস ক্লিনিকে তাকে ভর্তি করেন আনোয়ারা খাতুন। গত ২৮ নভেম্বর কোকিলা একটি ছেলে শিশু সন্তানের জন্ম দেন।
ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নগদ ৩০ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করে দেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ শহরের হেলাই গ্রামের সোহাগ হোসেনের কাছে।
এ ঘটনা জানতে পেরে সন্তানকে ফেরত পেতে বৃহস্পতিবার সকালে থানায় এসে অভিযোগ করেন কোকিলা খাতুনের স্বামী আকাশ হোসেন। তারপর পুলিশ গিয়ে কালীগঞ্জ উপজেলার হেলাই গ্রাম থেকে নবজাতককে উদ্ধার করেন। বিকেলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন কালীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু আজিফ।
উদ্ধার হওয়া নবজাতকের মা কোকিলা খাতুন জানান, অভাবের তাড়নায় ও খোঁজখবর না নেওয়ায় স্বামীর ওপর অভিমান করে ৭ দিন বয়সী শিশু ছেলেকে বিক্রি করে দেই। স্বামী দ্বিতীয় বিবাহ করার কারণে সে আমার কোনো খোঁজ খবর নেয় না। ক্লিনিকের সব খরচ মেটাতে এ ছাড়া আমার আর কিছুই করার ছিল না।
শিশুটিকে দত্তক নেওয়া সোহাগ আলী বলেছেন, আমি নিঃসন্তান। শিশুটিকে লালন-পালনের জন্য তার মায়ের কাছ থেকে কিনে নেই। শিশুর মা ও নানি আনোয়ারা খাতুনসহ এলাকার স্থানীয় কয়েকজনের উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে শিশুটির ক্লিনিকের খরচ ও তার মাকে নগদ ৩০ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ৫৫ হাজার টাকায় কিনে নেই। পরে পুলিশের নির্দেশেই শিশুটিকে তার মাসহ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছি।
ওসি আবু আজিফ বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন আকাশ হোসেন। গত ২৮ নভেম্বর তার স্ত্রী সিজারের মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেয়। আকাশ হোসেনকে না জানিয়ে তার স্ত্রী ও শাশুড়ি সন্তানকে দত্তক দেয়। পরে তার স্ত্রী কোকিলা খাতুন ভুল বুঝতে পারে এবং স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করে সন্তানকে উদ্ধার করে আনতে বলে।