৫-১৪ কেজি ওজনের জাপানি মুলা উৎপাদন হয় যেখানে
১১ দিন আগে রবিবার, ডিসেম্বর ২২, ২০২৪
ফটিকছড়ির মাইজভাণ্ডার দরবারে প্রতি বছর ১০ মাঘ ওরশ উপলক্ষে বসে মেলা। এই মেলায় আসে ৫ থেকে ১৪ কেজি পর্যন্ত ওজনের মুলা।
কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দেখা যায় মুলার হাট। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভক্ত-আশেকানরা মানত করে মাজারে দান করেন, আবার কেউ কিনে নিয়ে যান এই বিশাল আকৃতির মুলা।
এলাকায় এটি জাপানি বা ভাণ্ডারী মুলা নামে পরিচিত। চাষ হয় নাজিরহাট পৌরসভা, সুন্দরপুর, সুয়াবিল ইউনিয়নের হালদা নদীর চরে। এখানকার কৃষকদের দাবি, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় মুলা উৎপাদন হয় ফটিকছড়িতে।
নাজিরহাট পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড নাসির মোহাম্মদ ঘাট হালদার চরে বিস্তীর্ণ জায়গা জুড়ে শীতকালীন শাক সবজির চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে ভাণ্ডারী মুলা ও লাল আলু উল্লেখযোগ্য। ১৬ জন কৃষক মুলা চাষ করছেন বলে জানা গেছে।
এ বছরও ভান্ডারি মুলার বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রবাস ফেরত নাসির মোহাম্মদ ঘাটের কৃষক মো.সোহেল উদ্দিন বলেন, ২০২৩ সালে ১ লাখ টাকা খরচ করে সাড়ে ৩ লাখ টাকার মুলা বিক্রি করেছিলাম। এবছরও হালদার পাড়ে ভান্ডারি মুলা, লাল আলু, মরিচ, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন মৌসুমি সবজি চাষ করেছি। ৩ বছর ধরে ওরশের মেলায় ভান্ডারি মুলা বিক্রি করে লাভবান হয়েছি।
তিনি জানান, এ বছর ৩ কানি জমিতে মুলা চাষ করে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। বিক্রি করা যাবে প্রায় ৩ লাখ টাকা। রোপণ থেকে শুরু করে বিক্রির উপযোগী করতে সময় লাগে ৩ মাস। গত নভেম্বর মাসের মাঝামাঝিতে বৃষ্টির কারণে মুলার গায়ে পোকার আক্রমণ হয়। লেদা ও বিছা পোকার কারণে মুলার কিছু ক্ষতি হয়েছে।
চাষিরা জানান, ভাণ্ডারী মুলা এক একটির ওজন ৫ থেকে ১৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। বড় আকারের এই মুলা দামে সস্তা এবং স্বাদ ভালো হওয়ায় বাজারে চাহিদা রয়েছে। হালদার চরে বছরে ৩-৪ বার মুলা চাষ করা হয়। এই মুলা চাষ করে কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন।
কৃষক মফিজুর বলেন, গত বছর ২ কানি জমিতে ভাণ্ডারী মুলা চাষ করে প্রায় দেড় লাখ টাকা বিক্রি হয়েছে। একেকটি মুলার দাম ৭০-৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।আরেক মুলা চাষি মো. জাহাঙ্গীর জানান, এ বছর আবাদ বেশি হওয়ায় গত বছরের চেয়ে দাম তুলনামূলক কম হতে পারে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো.হাসানুজ্জামান বলেন, অন্যান্য এলাকার চাইতে হালদার চরের মাটির গুনাগুণ বেশি। নদীর পলি মাটির উর্বরতা ও হাইব্রিড জাতের বৈশিষ্ট্যের কারণে মুলার আকৃতি বড় হয়। ফটিকছড়িতে এবার ৪৯০ হেক্টর জমিতে মুলা চাষ হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠ পরিদর্শন করছেন।